Saturday 29 April 2017

জুলাই মাস, দুপুর আড়াইটা, আকাশের মুখ ভার, তাই রোদের সেই তাপ নেই। মৃদু হাওয়া দিচ্ছে, অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম, হঠাৎ রিক্সাওয়ালার ডাকে চমকে উঠলাম, “দেখেন দিদি, এই হোটেলটা ঠিক আপনার পছন্দ হবে।” রিক্সায় চড়ার  সময় বলেছিলাম, জনপদ থেকে দূরে, কোন ফাঁকা হোটেল দেখে দিতে। যেখানে নিরিবিলিতে কটা দিন কাটানো যায়। সত্যি কথা বলতে কি জীবনের উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছি। একটু শান্তি চাই। মানুষ জন আর সহ্য হচ্ছে না। পরিচিত পরিমণ্ডল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজের সাথে কিছু সময় কাটাতে চাই। কিছু বোঝাপড়া করা বাকি।
          অনেক ভেবেচিন্তে এই স্থান নির্বাচন করেছি। এই অঞ্চলটি খুবই স্বল্প পরিচিত এক পর্যটন কেন্দ্র। কয়েক বছর আগেও কেউ এই জায়গাটার নাম জানত না। রাজনৈতিক পালাবদলের পর ভ্রমণ পিপাসুদের চোখে পশ্চিমবঙ্গকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য এইরকম বেশ কয়েকটি স্থানকে সরকারি ভাবে গড়ে তোলা হয়। সেই প্রচেষ্টা খুব যে সফল হয়েছে বলা চলে না, তবে সপ্তাহান্তে কিছু বঙ্গসন্তান অবশ্যই আসে।
          পাছে কোন পরিচিত মুখ চোখে পড়ে যায়, তাই ইচ্ছে করেই সপ্তাহের শুরুতে এসেছি। আজ সোমবার। এক নজরে হোটেলটা মন্দ লাগল না। বরং বেশ ঝকঝকে। ভাড়া কত হবে?  সাধ্যাতীত হয়ে যাবে না তো? ইতস্ততঃ করছি দেখে রিক্সাওয়ালা  অভয় দিল, “ যান না দিদি, এই সময় লোক হয় না বলে, ওরা হাফ-প্রাইসে ঘর দেয়।”
ভাড়া চুকিয়ে হোটেলে ঢুকলাম। সামনে কেয়ারী করা বাগান, গাড়ি রাখার জায়গা, নুড়ি বসানো পথ ধরে তিনটি সিঁড়ি টপকে রিসেপশন রুম। সামনেই ম্যানেজারের  ডেস্ক, কিন্তু ফাঁকা। এদিক ওদিক তাকাচ্ছি, অ্যাকোরিয়ামের লাল-নীল মাছ গুলি ছাড়া অভ্যর্থনা জানানোর কেউ নেই। মিনিট তিন চার পরে হাঁফাতে হাঁফাতে এক ভদ্রলোক এলেন, বুশ শার্টের বোতাম আটকাতে আটকাতে। প্রৌঢ় মানুষ, মনে হল আমাকে দেখে বেশ হতাশ হয়েছেন। একে তো একলা মেয়ে, তায় পরনে ম্লান সুতির সালয়ার-কামিজ, কাঁধে একটা লাল-কালো কাপড়ের ব্যাগ, তাতে ‘রেমন্ড’ লেখা। সব মিলিয়ে মোটেই আকর্ষণীয় নয়।
জিজ্ঞাসা করলেন, “ক’দিন থাকবেন?” “তিন-চার দিন”। “হুঁ। ভাড়া ১২০০ টাকা, তবে অফসিজিনে ৬০০ টাকা লাগবে, প্রতিদিন। আর হাঁ দিনের বেলা আর রাতে আটটার পর জেনারেটার চলবেনি।” মাথা নাড়লাম। সকাল আটটায় চা, সাড়ে নটায় ব্রেকফাস্ট, রাত আটটায় ডিনার।“ আবার বাধ্য ছাত্রীর মত মাথা নাড়লাম। “নাম ঠিকানা লিখুন।“ ছদ্মনাম ভেবেই রেখেছিলাম, ঠিকানাও। ফোন নম্বরটা ফাঁকা রাখলাম। ওঠা ভুল লেখার রিস্ক নিতে পারলাম না।
          জনৈক আব্দুলকে ডেকে ম্যানেজার বাবু আমায় ঘরে পাঠিয়ে দিলেন। ঘরে ঢুকে অভিভূত হয়ে গেলাম, আমার জানলা দিয়ে সমুদ্র ডাকছে। হোটেলটিই প্রায় বেলাভুমি ঘেঁষেই উঠেছে। ঠিক নীল দামাল সমুদ্র নয়, কেমন যেন কালচে বুড়ো সমুদ্র। ঢেউ গুলো যেন অসীম ক্লান্তি নিয়ে পাড়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ছে। হোক বুড়োটে, তাও সমুদ্র তো।
          সমুদ্রের ধারে গিয়ে বসলাম। কতক্ষণ বসেছিলাম জানি না। ভাল লাগছে কি? কি জানি? সব অনুভূতি কেমন ভোঁতা হয়ে আসছে। আজকাল কিছুই ভাল লাগে না। মাত্র তিরিশেই নিজেকে ফুরিয়ে যাওয়া ক্ষয়াটে বৃদ্ধা মনে হয়। হরি দিন তো গেল, সন্ধ্যা হল। ঠিক কতক্ষণ বসেছিলাম জানি না। ঘোর কাটতে দেখি সূর্য কখন পাটে  বসেছে, সন্ধ্যা নামছে। ফাঁকা ধূধূ বালুকাবেলায় শুধু আমি একা। না ভুল বললাম, দূরে একটা আবছা অবয়ব দেখা যাচ্ছে, তা কোন মানব না ছায়ামানব জানি না। কি বা যায় আসে।
          হোটেলে ঢুকতেই আব্দুল বলল, “মেমসাহেব, চা খাবেননি?” ‘মেমসাহেব’?? হাসি চেপে ডাইনিং রুমে বসলাম। ডাইনিং রুমে আরও এক জন বসে আছেন। সম্ভবত বোর্ডার , বেশ সুদর্শন, গৌর বর্ণ, তীক্ষ্ণ নাসা, চোখে রিমলেস চশমা। আমাকে দেখে মৃদু হেঁসে বললেন, “ম্যাডাম কে আজ এসেছেন?” প্রমাদ গুনলাম। এই রে ,এই শুরু। এবার নাম- ধাম, পরিচয় সেখান থেকে কত যে শাখা প্রশাখা বেরোবে? একা মেয়ে দেখে ঘনিষ্ট হবার চেষ্টা না করাটাই অস্বাভাবিক। যথাসম্ভব গম্ভীর হয়ে, সৌজন্যমূলক ভাবে ঘাড় নাড়লাম শুধু। ঊনিও আর কিছু বললেন না। আমিও কথা বাড়ালাম না। তবে অনার আওয়াজ বহুক্ষণ আমার কানে প্রতিধ্বনিত হতে লাগল, একেই বোধহয় ব্যারিটোন ভয়েস বলে।
          এখানে ইলেক্ট্রিসিটি নামকাওয়াস্তে থাকে। থাকলেও ভোল্টেজ খুবই অল্প। রাত্রে প্রায় কোনদিনই থাকে না। সপ্তাহান্তে হোটেল ভর্তি থাকলে সাড়া রাত জেনারেটর চলে, না হলে রাত আটটার মধ্যে খাওয়া-দাওয়ার পাট চুকিয়ে, সাড়ে আটটার মধ্যে জেনারেটর বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে সময় যে হতভাগ্যরা থাকে, তাদের  হোটেলের তরফ থেকে হ্যারিকেন আর প্রয়োজন হলে টর্চ দেওয়া হয়। নৈশ ভোজ চলাকালীন আমাদেরকেও হাতে হ্যারিকেন ধরানো হল। ওনার টর্চ আছে, তাই আমাকে একটা টর্চ ও দেওয়া হল। খেতে খেতে দেখলাম, ম্যানেজার বাবু আর আব্দুল ওনাকে খুব খাতির করে।
          খেয়ে ঘরে ফিরছি, উনি বললেন, ‘ ম্যাডাম, এখনি ঘরে গিয়ে কি করবেন? চলুন পিছনের আঙিনায় গিয়ে বসি। জোয়ারের সময়, সমুদ্র প্রায় আঙিনা অবধি চলে আসে। কপাল ভাল থাকলে, আপনার পদস্পর্শও করে যেতে পারে। ’ লোভ সামলাতে পারলাম না। পিছনের আঙিনায় বেশ কিছু গার্ডেন চেয়ার পাতা আছে, তার একটায় গিয়ে বসলাম। উনিও বসলেন, তবে আমার থেকে বেশ কিছুটা দূরে। ঝুপ করে আলো নিভে গেল। নিভু নিভু হ্যারিকেনের  আলোয়, সে এক অদ্ভুত রহস্যময় পরিবেশ। ঝিঁঝিঁর ডাক, আর জলের ছলাৎ ছলাৎ, সাথে শিহরণ জাগানো নোনতা সোঁদা বাতাস। কত ব্যেস হবে ওনার, মধ্য চল্লিশ তো বটেই, পঞ্চাশের কাছাকাছিই হবে। একটু দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম, অন্ধকার চরাচরের সুযোগ নেবেন কি না? কিন্তু উনি কিছুই বললেন না। আমি ঘড়ি পরিনি। উনি টর্চ জ্বেলে ঘড়ি দেখে বললেন, “চলুন, এগারোটা বাজে।”
ওনার পিছন পিছন হোটেলে ঢুকলাম। আমাকে শুধু আমার ঘর অবধি এগিয়ে দিলেন তাই না, আমার ঘরের সামনে আমার টর্চ আর হ্যারিকেনটাও ধরলেন, যাতে আমি তালা খুলতে পারি। তালা খুলে, ঘরে ঢুকে ওনার দিকে তাকালাম, উনি একটা হাত কপালে ঠেকিয়ে, বললেন, “ওককে ম্যাডাম। শুভরাত্রি।“
          দরজা বন্ধ করে পুরো বেকুব লাগছিলো, নিজেকে চড় কসাতে ইচ্ছে করছিল; কি চাইছিলাম আমি? আমাকে পাত্তা দেবেন উনি? আমার সাথে ঘনিষ্ট হবার চেষ্টা করবেন? কোন মূর্খের স্বর্গে বাস করি আমি? এককালে আমি মনে করতাম, আমার থেকে কুরূপা কোন মেয়ে এই পৃথিবীতে নেই, সেই অনুভূতিটা আবার ফিরে আসছিলো। জীবনে কোন কিছুকেই সহজ ভাবে গ্রহণ করতে পারি না। প্রেম প্রস্তাব কম পাইনি, কিন্তু একটাও বিশ্বাস হয়নি। আমার দৃঢ় ধারণা আমি পুরুষদের অভিসন্ধি খুব ভাল বুঝতে পারি। এই প্রথম হিসেব মিলল না।

          ভোরের নরম আলো মুখে এসে পড়তেই ঘুমটা ভেঙে গেল। দৌড়ে গেলাম সমুদ্রকে দেখতে। কিন্তু কোথায় সে? ভাটার টানে বেশ পিছিয়ে গেছে। ওনাকে দেখতে পেলাম, প্রাতভ্রমণে বেড়িয়েছেন। ব্যালকনিতে আমাকে দেখে, হেঁসে হাত নাড়লেন। ঈশারায় ডাকলেন, নেমে আসতে। হঠাৎ মনটা ভীষণ ভালো হয়ে গেল। দৌড়ে গেলাম সৈকতে ওনার কাছে। ঈশ! কি দামি ট্রাক প্যান্ট আর রাউন্ড নেক টিশার্ট পরেছেন। হাতের ঘড়িটাও দুর্মূল্য, সুইস তো বটেই। ওনার পাশে কি অস্মভব বেমানান আমি। দু একটা ভালো জামা কাপড় ও আনিনি। মনটা আবার তেতো হয়ে গেল।

প্রাতঃরাশের সময় উনিই প্রস্তাব দিলেন, কাছাকাছি কয়েকটা মন্দির আছে, দেখতে যেতে ইচ্ছুক কি না। মন্দির? আমি আস্তিক বটে, তবে আমার বয়সী অন্যান্য মেয়েদের মতই মন্দির- পুজো এসব থেকে দুরেই থাকি। দুর্গাষ্টমী আর সরস্বতী পুজোয় অঞ্জলি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করি না। কিন্তু ওনার আকর্ষণ এড়ানো আর আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া সময়টা তো কাটবে। না হলে সারাদিন বদ্ধ ঘরে একা বসে বসে স্মৃতি রোমন্থন করা ছাড়া কি বা করার আছে? আর স্মৃতি মানেই তো সব ভেস্তে যাওয়া, তাসের ঘরের স্মৃতি। সব কিছুর জন্য নিজেকে দায়ী করা। ভাবতে বসলেই বুকে চাপ ধরে,হাঁসফাঁস করে উঠে জানালাম, যাব। 

 কি যে ছাই পরে যাই? তেমন কিছুই তো আনিনি।নিজেকে হারিয়ে ফেলতে বেরিয়েছিলাম, তাই কয়েক জোড়া সস্তা সুতির সালওয়ার আর অতি সামান্য প্রসাধনী ছাড়া কিছুই আনিনি। কি হবে ঐ ভার বহন করে? কে দেখবে আমায়?ভাবিনি ওনার সাথে দেখা হবে, খুব আফসোস হচ্ছে এখন। যাই হোক, যা আছে, তাই পরলাম, চুলে চিরুনি চালিয়ে কি মনে হল, চোখে হাল্কা করে কাজলের রেখা টানলাম আর কপালে একটা কালো ছোট টিপ।লিপস্টিক নেই, অগত্যা ঠোঁটে একটু লিপ বামই ঘষে নিলাম। হাল্কা লালচে একটা আভা এল। আয়না অন্য কিছু বলতে গেল, ধ্মকে বললাম, “ভালোই লাগছে তো?”
 নীচে উনি অপেক্ষা করছিলেন, হাসি হাসি মুখে কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম, উনি একবার তাকিয়েই রাস্তার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বললেন, “চলুন। ভ্যান দাঁড়িয়ে আছে।“ বুকের মধ্যে গরম লৌহ শলাকা ঢুকিয়ে দিল কি কেউ? এত কান্না পাচ্ছে কেন? কি ভেবে ছিলাম? উনি আমাকে দেখে গলে যাবেন? উনি এগিয়ে যেতেই রুমাল দিয়ে মুছে দিলাম লিপবাম। কড়ে আঙুলের ডগা দিয়ে ফেলে দিলাম সস্তা সোয়েটের টিপ। আলতো করে চোখের জলের সাথে সাথে মুছে দিলাম কাজল, সম্পূর্ণ ওনার অগোচরে। কি হবে? কে দেখবে আমায়? 

একটা ভ্যানে করে চলেছি দুজনে। উনি মাঝে মাঝে কথা বলছেন, আমি হুঁ-হাঁ করে জবাব দিচ্ছি। আজ আকাশে মেঘ থাকলেও সূর্যি মামার তেজ কিছু কম নেই। ওনার মূল্যবান চশমা রোদের তাপে কালো হয়ে গেছে। ইশ্ একটা গগলস ও আনিনি। প্রথম মন্দিরটি শিবের। কিন্তু মন্দিরে কোন শিবমূর্তি নেই। শিবলিঙ্গ আছে বটে, তবে আসল পূজ্য হল দুটি পাথরের ভাঙা পা। অনেক গভীরে মাটিতে প্রথিত হাঁটুর একটু নীচে থেকে ভাঙা দুই অতিকায় পাথুরে পা। তাকেই মহাদেবের শ্রীচরণ বলে উপাসনা করা হয়। চারিদিকে পাতকুয়ার মত উঁচু বেষ্টনী দিয়ে ঘেরা। আমাদের অসম বয়স দেখে পুরোহিত একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলেন, তার ওপর আমরা একে অপরকে আপনি-আপনি করছি, বেচারা পুরোহিতের অবস্থা দেখে হাসি পাচ্ছিল। উনি অবশ্য আদপেই পুজো দিতে উৎসাহী ছিলেন না। নাস্তিক কি না বুঝলাম না। ওনার মূল উৎসাহ এই মন্দিরে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব খোঁজায়। ওনার বদ্ধমূল ধারণা, এই দুটি ভাঙা পা আসলে ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোন বুদ্ধ মূর্তির। মন্দিরের মুখ্য দ্বারের দু পাশে দুটি সিংহ মূর্তি রয়েছে, দেখতে অনেকটা চীনা ড্রাগনের মত। উনি মুগ্ধ হয়ে দেখছিলেন, সাগ্রহে বললেন, “দেখছেন ম্যাডাম, এই হল ‘মার’, ‘মারের’ মূর্তি। বিশ্বাস হল আমার কথায়?” অস্বীকার করব না, সত্যি আমিও বিশ্বাস করতে শুরু করেছি, কত বৎসর ধরে কত ইতিহাস, কত ভাঙা গড়ার সাক্ষী এই ‘মার’ দুটো।ভাবতেই রোমাঞ্চ জাগে। নিজেকে, নিজের সমস্যা গুলিকে নিতান্তই তুচ্ছ মনে হচ্ছে।

 আবার অন্য মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। রোদ নেই, তবে তাপটা ভালোই। ছাতা খুললে ভালোই হয়, কিন্তু কি অদ্ভুত সঙ্কোচে খুলতে পারছি না।উনি কি ভাববেন? হাসিও পাচ্ছে, আমি ছাতা খুলব কি না, তাই নিয়ে কে মাথা ঘামাবে? বরাবরই নিজেকে অহেতুক গুরুত্ব দি। উনি মাঝে মাঝে কথা বলছেন, মাঝে মাঝে নীরব। দুপাশে চাষের জমি, কাজু বাদাম গাছের বাগান দেখতে দেখতে যাচ্ছি, হঠাৎ উনি বললেন, “অখন্ড বাংলাদেশের সব মন্দিরই যে বৌদ্ধ মন্দির ভেঙে তৈরি, তা বলা যায় না।তবে বৌদ্ধ প্রভাব সুস্পষ্ট। ইতিহাস অনেক কথাই সোচ্চারে বলে না, আর সব ইঙ্গিত আমরা ধরতে পারি না। ছাতাটা বরং খুলেই ফেলুন।“
 হেসে ফেললাম। আমি যে অন্যমনস্ক ভাবে ব্যাগে হাত বলাচ্ছিলাম,সেটা ওনার নজর এড়ায়নি।উনিও হাসলেন, একটু থেমে বললেন, “বাংলায় একটা কথা আছে, জানি না আপনাদের প্রজন্ম তা জানে কি না?” আমি ভ্রূ কুঁচকে বললাম, “কোনটা বলুন তো?” উনি আমার চোখে চোখ রেখে বললেন, “মুখ হল মনের আয়না।এই কথাটা এই ভাবেও বলা যায় যে, আপনার আয়নাটা যদি ঝকঝকে থাকে, তাহলে কোথাও তা আপনার মনের মালিন্য তা কাটাতেও সাহায্য করে।“ কিচ্ছু বুঝতে পারছিলাম না, উনি মৃদু হেসে বললেন, “স্বল্প প্রসাধন কিন্তু মন্দ নয়।“ লাল- গোলাপি- বেগুনী হয়ে গেলাম। কিছুই ওনার নজর এড়ায় না।
#AninditasBlog

 

No comments:

Post a Comment