Thursday 8 February 2018

বইমেলার কবিতা


দেখা হয়ে গেল বইমেলাতে। সেই বহু পরিচিত, দেখেও না দেখা নাক উঁচু ভাব করে চলে যাচ্ছিল। বুকের ভিতরটা কেমন করে উঠল। আচ্ছা আমিই না হয় আগে নত হলাম। নির্ঘাত ভাবল কি গায়ে পড়া মেয়ে রে বাবা।  জিজ্ঞেস করলাম,“তুমি এখানে?” থমকে গেল, পলকের জন্য মুখ থেকে খসে পড়ল বিজ্ঞের মুখোশ।হতভম্বের মত বলল,“কেন আমি বই পড়ি না?” বললাম,“ না মানে ঐ যে কি সব ট্যাব,কিণ্ডল- পিডিএফ ঐ সব পড় বোধহয়।  তাই-”। কোন জবাব দিল না। চোখের দৃষ্টিতে মৃদু ধমক যে দিল বেশ বুঝলাম।চলে যাবে কি এখুনি? আবার অচেনা যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গেল হৃদয়। মন চিৎকার করে উঠল, আরও কিছুক্ষণ না হয় রইলে কাছে--। শুনতে যে পেল না সেও বুঝলাম। মুখ বন্ধ ছিল যে।
আজ আর কিছুতেই কথার স্রোতকে থামতে দিতে চাই না। তাই বললাম,“ তোমার সেই ডাস্ট এলার্জি?সেরে গেছে বুঝি?” জবাবে ভ্রু কুঁচকে বলল,“কমোনি তো দেখছি এক ছটাকও। ” মোটা বলল বুঝি, রাগ হল না তো?হৃদয়ের বেদনা যেন কিছুটা উপশম হল, বললাম,“নাঃ কমিনি। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে বরং বেড়েই গেছি। ” হাল্কা হাসির রোদ খেলে গেল কি দাড়িগোঁফের জঙ্গলে? সুযোগ বুঝে বললাম,“একটা সেল্ফি?” বলল,“সেল্ফাইটিস্ টাও বেড়েছে দেখছি।” বলতে পারলাম না,“কয়েদ করে রাখতে চাই এই মুহূর্তটাকে। যেমন রেখেছি তোমার সঙ্গে কাটানো আরো অজস্র মুহূর্ত।" বলতে পারলাম না, একদলা কষ্ট কোথা থেকে এসে চেপে ধরল বুক আর গলা। ছলছলে চোখকে অন্যদিকে ঘোরালাম, ধরা পড়তে চাই না। কিছুতেই না। সূর্য কি পশ্চিমে ঢলে পড়ল খানিকটা? এখনও একটাও বই কেনা হয়নি। তার হাত ও খালি। এবার যেতে হয় এবং যেতে দিতেও হবে। মন বলল,“ভালো থেকো। ” আর সে? সে বলল,“চলো তোমার ছবিটা তুলে নি”। হাসলাম দুজনেই। ক্যামেরার সামনে হাসতে হয় তো। শাটার বন্ধের সাথে সাথেই কি নেমে আসবে নিশ্ছিদ্র  অমানিশা?না কি সব নিয়ম ভেঙেচুরে দুমড়ে মুচড়ে উল্টোদিকে দৌড়বে পৃথিবী?

No comments:

Post a Comment